আর প্রয়োজনের তুলনায় অর্ধেক চিকিৎসক হওয়াতে বাড়তি রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, ২৫০ শয্যার হাসপাতাল হলেও এখানে রোগী ভর্তি রয়েছে ৫শ ৪১ জন। বতর্মানে ডেঙ্গুর ভয়াবহতায় রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় মেঝে, করিডোরেও চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। চিকিৎসক-নার্সরা ডেঙ্গুসহ অন্য রোগীদের চিকিৎসাসহ সার্বিক পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শিশু ওয়ার্ডে ২৬ শয্যার বিপরীতে ১শ ১৩ জন শিশু চিকিৎসাধীন রয়েছে। মেডিসিন ওয়ার্ডে ৫২ শয্যার বিপরীতে ২শ ১৪ জন, ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ১৭ শয্যার বিপরীতে ৩২ জন, ডেলিভারি ওয়ার্ডে ১৭ শয্যার বিপরীতে ৩৫ জন, সার্জারি ওয়ার্ডে ৪৮ শয্যার বিপরীতে ৭৫ জন এবং গাইনি ওয়ার্ডে ২৬ শয্যার বিপরীতে ২৭ জন ভর্তি রয়েছেন।
হাসপাতালে আগত রোগী রহিমা বেগম জানান, দিনে একবার মাত্র ডাক্তার আসেন, বাকী সময় নার্সরা রোগী দেখেন। অনেক সময় তাদেরও পাওয়া যায় না।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১০০ শয্যাবিশিষ্ট এ হাসপাতালকে ১৯৮২ সালে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। সেই তুলনায় জনবল নিয়োগ দেয়া হয়নি। ২৮৫টি পদের বিপরীতে ১০২টি পদ শূন্য রয়েছে। ৫৫ জন ডাক্তারের মধ্যে ১৮ টি পদ শূন্য রয়েছে। সহকারী পরিচালক পদটিও শূন্য দীর্ঘদিন। দুজন আবাসিক মেডিকেল অফিসারের মধ্যে একজনের পদ শূন্য।
খালি রয়েছে প্যাথলজিস্টের পদও। জুনিয়র স্বাস্থ্য কর্মকর্তার দুটি পদের মধ্যে একটি নেই। ৮২টি সিনিয়র স্টাফ নার্স পদের মধ্যে ১৩ জন, সহকারী সেবক ৫টির মধ্যে ৩টি, তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী ৪১টির মধ্যে ২৩টি ও ৪র্থ শ্রেণির ৭৩ জন কর্মচারীর মধ্যে ৪৬টি পদ শূন্য রয়েছে।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আবু তাহের পাটোয়ারি জানান, প্রতিদিন যে পরিমাণ রোগী থাকে সেই অনুযায়ী চিকিৎসক, নার্স ও শয্যা থেকে শুরু করে অনেক সংকট রয়েছে। এত কম ডাক্তার-নার্স নিয়ে মানুষের সেবা দেয়া দুরূহ। তারপরও আমরা ভালো সেবা দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. বিধান কুমার সেন জানান, ডাক্তার-নার্স নিয়োগ দিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে লিখিতভাবে চিঠি দেয়া হয়েছে।
এসব সমস্যার বিষয়ে ফেনীর সিভিল সার্জন মো. নিয়াতুজ্জামান বলেন, ‘প্রতি মাসে আমরা মন্ত্রণালয়ে সকল সমস্যার বিষয়ে লিখিতভাবে অবহিত করি। কিন্তু কোনো আপডেট পাইনি। তবে হাসপাতালে জনস্বার্থে ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান আছে।’